কলকাতা: সামনেই একুশের নির্বাচন। একদিকে যেমন রাজ্যের সুপ্রিমো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উঠেপড়ে লেগেছেন নানান উন্নয়নমূলক কাজ করতে, অন্যদিকে বাংলার শিক্ষিত বেকাররা নিজেদের বেকারত্বের বোঝা কাঁধে নিয়ে আন্দোলনের পথ বেছে নিচ্ছে সরকারের বিরুদ্ধে, তাদের নিজের হকের দাবিতে, সরকারের তাদের প্রতি বঞ্চনা এবং উদাসীনতার বিরুদ্ধে। এরই এক বিরাট প্রতিফলন দেখা যায় আজ বুধবার কলকাতায় এপিসি ভবন তথা বিকাশ ভবনের সামনে, যেখানে ২০১৭ সালে প্রাইমারি টেট আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থীরা পরীক্ষা এবং বৈধ নিয়োগের দাবিতে এক আন্দোলন অভিযান গড়ে তোলে।
সেই ২০১৭ সালে ফর্ম ফিল আপ হয়েছিল প্রাইমারি টেট -এর, তারপর ডুমুরের ফুল পরীক্ষা, নিয়োগ তো আরও দূরের কথা। গত তিন বছর পেরিয়ে গেছে, কত বঞ্চনার শিকার হতে হয়েছে এদের শুধু এরাই বলতে পারবে। তাই সরকারের তাদের প্রতি এহেন উদাসীনতা এবং এক অবৈধ নিয়োগের দাবিতে আজ তারা স্কুলের পরিবর্তে রাস্তায়, তাও সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে।
তাদের দাবি, ২০১৪ সালের টেট এখন ইতিহাস। যারা পাশ করে চাকরি পেয়েছিল পেয়েছে, কিন্তু যারা পাশ করে চাকরি পায়নি তাদের কেনো আবার নতুন করে নিয়োগ করা হবে? তাদের মতে এর ফলে বঞ্চিত হবে তারা, যার ফলে তাদের ভবিষ্যতে নিয়োগ আর সম্ভব হবে না।
এছাড়াও আরো নানান দাবিদাওয়া রয়েছে ২০১৭ সালে আবেদন করা চাকরিপ্রার্থীদের। যেমন,
১. অবৈধ এবং আইন বিরোধী নিয়োগ করা চলবে না।
২. প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাকরিপ্রার্থীদের যারা ২০১৭ তে আবেদন করেছিল, তাদের পরীক্ষা নিয়ে ভোটের আগেই নিয়োগ।
৩. নতুন করে ফর্ম ফিল আপ আর করা যাবে না।
৪. B.Ed প্রার্থীদের প্রাইমারি টেটে বসতে দেওয়া যাবে না।
৫. ২০১৪ -তে পাশ করা টেট প্রার্থী এবং ২০১৭ সালে পরীক্ষা নেওয়ার পর যারা পাশ করবে তাদের একই সঙ্গে ইন্টারভিউয়ে ডেকে নিয়োগ।
এককথায় ২০১৭ সালে যারা আবেদন করেছিল টেট -এর জন্য তারা আর বঞ্চনার শিকার হতে চায়না।
অন্যদিকে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে ১৬,৫০০ শূন্যপদে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ঘোষণা করে। কিন্তু ঠিক কাদের নিয়োগ করা হবে এ নিয়ে জল্পনা এখনও তুঙ্গে। তবে যেটা বোঝা যাচ্ছে, সরকার ২০১৪ সালের পাশ করা টেট প্রার্থীদের নিয়োগ করতে প্রকাশ করেছে এই শূন্যপদ। তাই এদিন এপিসি ভবন ও বিকাশ ভবন -এর সামনে D.El.Ed প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত টেট প্রার্থী (২০১৭ সালে আবেদনকারী চাকরিপ্রার্থীরা) তাদের ঐক্য মঞ্চের ডাকে বিক্ষোভে সামিল হয় এবং সেখান থেকে দাবি জানায় যদি সারকার অতি শীঘ্রই তাদের দাবি পূরণ না করে তবে আরও বৃহত্তর আন্দোলন তথা অনশনের পথ বেছে নেবে তারা।